Tuesday, May 5, 2020

গল্প : নাবিলের আব্বু



মো: ইয়াউমিন কাওসার চৌধুরী

আজ সকাল থেকেই নাবিলের খুব খুশি লাগছে। আনন্দে তার নাচতে ইচ্ছে করছে আর সুর করে গান গাইতে
 মন চাচ্ছে "তাত দিনা দিন দিন.........' কারন আজ তার প্রথম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকী জন্য অবশ্য তার খুশি খুশি লাগছে না। খুশি লাগছে অবশ্য অন্য কারনে।
গতকাল রাত্রে যখন তার আম্মু তাকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল তখন হঠাৎ করেই তাকে বলল " আব্বু তুমি কি জানোকালকে
 তোমার জন্মদিন? " 
নাবিল তখন বলেছিল " দম্মদিন তি আম্মু?" 
তখন তার আম্মু তার আদরের দুলালের কপালে চুমু একে দিয়ে বলেছিল "জন্মদিন হল যেদিন তুমি এই দুনিয়ায় এসেছিলে " 
নাবিল তার আম্মুর এমন কঠিন কথার কোন মানেই খুজে পেলনা। সে ফ্যাল ফ্যাল করে তার আম্মুর মায়াবি মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

সে ভেবে কুল কিনারা করতে পারল না আম্মুর এই কথার অর্থ। সে ভাবনার জগতে হারিয়েই গেল, আর কোন কথা না বলেই
 সুবোদ বালকের মতো খাওয়া দাওয়া শেষ করল।
রাত্রে যখন আম্মু তাকে ঘুম পাড়ানির গান গেয়ে ঘুম
 পাড়াচ্ছিলেন তখন সে আর চুপ রইল না। নাবিল আম্মুকে বলল "আম্মুআমি আদে তৈ তিলাম? "  নাবিলের আম্মু প্রথমে ছেলের এমন প্রশ্ন বুজতে না পারলেও পরক্ষনেই বুঝে নিলেন ছেলের মনের কথাটি। তাই তিনি মজা করেই বললেন " এই কথাতুমি আমার এই পেটের মধ্যেই ছিলে বাবা " বলেই তিনি মুচকি হেসে ছেলেকে 
বুকে জড়িয়ে নিলেন  মায়ের এমন উষ্ণ ভালোবাসায় নাবিলও দুহাতে মাকে জড়িয়ে ধরল। সে মনে মনে চিন্তা করল রাজুদের ঘরে দেখা মুরগির 
বাচ্চাগুলোর কথা।

 রাজুর কথা মনে হতেই তার মনে পড়ে গেল রাজুর আব্বুর 
কথাযাকে সে আন্কেল বলে ডাকে।সে প্রায় প্রতিদিনই দেখে রাজুর আব্বু যখন বাইরে থেকে আসে তখন তার জন্য চকলেটবিস্কিটখেলনা আরো কত কিছুই 
নিয়ে আসে। কিন্তু তার আব্বু কৈ ? তিনি তো এখনো একদিনও নাবিলকে দেখতে এলেন না ...

নাবিল তার আম্মুকে আরো শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে। আদুরে তুলতুলে কন্ঠে বলল "আম্মু আমাল আব্বু তৈ?" ।ছেলের এমন প্রশ্নে নাবিলের আম্মু থমথম খেয়ে যান। তিনি কি জবাব দেবেন তাই খুজে পাচ্ছিলেন না। নাবিল  সময় যদি তার মায়ের মুখের দিকে তাকাত তাহলে
 দেখতে পেত তার মায়ের মুখ কেমন কালবৈশাখীর আকাশের রূপ ধারন করেছে। তিন শত কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বললেন "তুমার আব্বুকে 
বুঝি দেখত চাও? "নাবিল মাথা নেড়ে বলল, "হুম দেততে তাই " "ঠিক আছে বাবা তাইলে এখন ঘুমাওকাল সকালেই তুমাকে নিয়ে যাব তোমার বাবার কাছে "
নাবিল খুশিতে কাল সারারাত ঘুমুতে পারে নি।কিন্তু মায়ের বকুনি খাবে বলে ঘুমের ভান করেছে সারাটি রাত্রি। সকাল সাকাল তাই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আজ। 

তার যেন আর তর সহ্য হচ্ছে না। খুশিতে তার আগডুম - 
বাগডুম ৭রে নাচতে ইচ্ছে করছে। সে গতকাল সারা রাত বাবাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা 
করেছে। 
নাবিল প্লান করেছে বাবা যদি তাকে প্রচুর পরিমানে ক্যান্ডি না দেয়তাহলে সে তার সাথে কথাই বলবে না ......
মা টাও যে কিএত বেলা হয়ে গেল তবুও কোন সাড়া নেই। কখন যাবে বাবার কাছে নিয়ে। তার যে আর দেরি সহ্য হচ্ছে না। বাবার গলা জড়িয়ে ধরবে। বাবার গালে ,নাকেকপালে উম্মা দেবে ঠিক রাজু যেভাবে তার বাবাকে দেয়। রান্নাঘরে নাবিল মায়ের চারপাশে আলতো আলতো পা ফেলে ঘুর ঘুর করতেই থাকে....মায়ের কি আর বুজতে বাকি বাবার মমতা ছাড়া বেড়ে উঠা ছেলেটি আজ কি চায়নাবিলের মাও হাতের কাজে তাড়া দেন। দ্রুত কাজ শেষ করে ছেলেকে গোসল করিয়ে নেন। সাদা পঞ্জাবিপাজামা আর টুপি পরিয়ে দেন হাড়ি থেকে একটু কালি হাতের আঙুলে লাগিয়ে ছেলের কপালের ডান পাশে একটি ছোট্ট বৃত্ত একে দিয়ে বলেন "আমার রাজপুত্র বাবা "

নাবিলের আনন্দ দেখে কে। তার যেন আজকে ঈদের আনন্দ। আনন্দে তার দম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কালো বোরকায় আপদমস্তক ডাকা নাবিলের আম্মু তাকে কোলে তুলে নিলেন। রওয়ানা দিলেন নাবিলের আব্বুর সাথে সাক্ষাত করার জন্য। নাবিলের মনে থেকে থেকে আনন্দের ঝিলিক দিলেও গত রাত থেকে তার মায়ের মনে কেমন অশান্তি বিরাজ করছে। ফর্সা মুখখানা যেন এক অজানা দুশ্চিন্তায় ফ্যাকাসে হয়ে আছে। তিনি তার আদরের দুলালকে কোলে নিয়ে হাটতে হাটতে হারিয়ে গেলেন কল্পনার রাজ্যে।
বেশি দিন আগে নয়বছর চারেক আগের কথা। রকারি প্রাইমারি স্কুলে সদ্য চাকুরি পাওয়া রাহামের সাথে নাফিসার বিয়ে হয়। নাফিসা তখন ডিগ্রী শেষ বর্ষের ছাত্রী। যদিও নাফিসা এই সময়ে বিয়ে করতে মোটেই প্রস্তুত ছিল না।তারপরেও তাকে রাজী হতে হয়েছিল বাবা মায়ের জন্যই। গ্রামে সাধারনত তার বয়সী মেয়ে খুব কমই পাওয়া যাবে যাদের বিয়ে হয়নি। 
মোটামুটি ধুমধাম করেই নাফিসার বিয়েটা হয়ে গেল। চেনা - জানা এক পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ এক অচেনা পরিবেশে এসে নাফিসা তার সংসারকে নিজ কর্মগুণে সাঝাতে শুরু করে দিল। সে ধীরে ধীরে শশুড়-শাশুড়ির মনে জয়গা করে নিল আপন মেয়ের মতই। বিয়ের পর প্রথম প্রথম মা-বাবাকে অনেক মিস করলেও রাহামের মা-বাবার আচরনে নাফিসা তার নিজ বাবা মায়ের অভাবটুকু ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে লাগল। স্বামীর সোহাগ আর শ্বশুড় শাশুড়ির ভালোবাসায় তার বেশ আনন্দেই দিন কাটাতে লাগল।
নাফিসার মনে পড়ল সেই রাতটির কথাযেদিন প্রানের স্বামীকে নাবিল তার গর্ভে আসার শুভ সংবাদটি দিয়েছিল। সেদিন সারা রাত্রি রাহাম ঘুমায়নি। তাদের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে। যদি ছেলে হয় তবে কি নাম রাখবে আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে? ?? 
ভাবতে ভাবতে সে রাতটি নির্ঘুমই কেটেছিল দুজনার। অতপর ভোরের আলো ফুটার পর রাহাম যে কান্ডটি করেছিল তা স্মরণ করলে এখনো নাফিসা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে....

(চলবে)


Sunday, May 3, 2020

আসাক ( আমার সাত কথা)



প্রথম কথা হলো,  ইসলামী মূল্যবোধ আপাতত জায়গা নেয়নি। সুতরাং যারা মিক্সিং খেতে পছন্দ করেন তারা ঐ পথ মাড়াবেন।

দ্বিতীয় কথা হলো, তারা কাউকে জোর করছে না, জবরদস্তি করছে না,  কাউকে হেয় করছে না বরং আপনারাই করছেন তাদের প্রতি বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করে।  যা একটি আদর্শের বিপরীত।

তৃতীয় কথা হলো,  আপনারা যারা তাদের পেজে, আইডিতে গিয়ে কমেন্ট করছেন, শেয়ার করছেন উল্টো তাদের প্রমোট করছেন ।  চুপ করুন। মাতামাতি বন্ধ করুন।

চতুর্থ কথা হলো,  এটা কি নতুন কিছু?'৮৯  এও ঘটেছিল।  বিভিন্ন দেশেও তা ঘটেছে।  বর্তমান আপনাদের আইডল তুরস্কেও এমনটি ঘটেছিল এরদোয়ানের নেতৃত্বে।

পঞ্চম কথা হলো,  তাদের সফলতা কামনা করুন। এতে ক্ষতির কি? এরদোয়ানও তো সফল হয়েছেন।  তাতে কি ইসলামের ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে?

ষষ্ঠ কথা হলো, আপনার আদর্শের ছায়ায় লালিত হয়ে কিছু সংখ্যক দেশ জয়ের স্বপ্ন দেখে। দেশ নেতা হয়ে কল্যান রাষ্ট্র উপহার দিতে চায়।
বলুন, আলহামদুলিল্লাহ!  এদেরকে ত আপনারাই গড়ে তুলেছেন, তবে বিরোধীতা কেন।  এ তো গর্বের বিষয়!

সপ্তম কথা হলো, আশা এবং হতাশা।  দেশ জয়ী ঐ নেতা গড়ে উঠেছিলেন একেবারেই গ্রাসফুট লেভেল থেকে। জনগনের সাথে তার সম্পর্ক ছিল নখ-গোস্তের সম্পর্ক। যেখান থেকে তিনি সফল।
আপনারাও হতাশ হবেন না, এনাদের মধ্যে কেউ আজ পর্যন্তও যেহেতু কোন মেম্বার ইলেকশন করেন নাই, সেহেতু এখন করবেন এবং জনসম্পৃক্ত হবেন।  দেশ নেতা হয়ে উঠবেন। আশাবাদী হোন, হতাশাবাদীদের এ আদর্শে জায়গা নাই।

Wednesday, March 18, 2020

নবাবজাদা এবং কয়েকটি প্রশ্ন........






ইতালি ফেরত কিছু সংখ্যক প্রবাসীদের নিয়ে স্যোসাল মিডিয়া ভাইরাল।  তাদের আচরন, ব্যবহার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে ফেসবুক-টুইটার জগতে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। কেউ প্রবাসীদের পক্ষ নিচ্ছেন আবার কেউবা পক্ষ নিচ্ছেন মন্ত্রী মহোদয়ের।
কেউবা দোষছেন প্রবাসীদের আবার কেউবা দোষছেন সরকারকে তাদের দেশে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

আমরা বাংলাদেশী আর সে কারনেই আমাদের মধ্যে একটা স্বভাব সবসময় কাজ করে আর সেটা হচ্ছে দোষারোপ।   আমরা নিজেদের ভুল/অন্যায়কে কখনোই দেখি না, আমাদের ভুল/অন্যায় কোন কাজের জন্য অন্য আরেকজন অথবা দশজন যে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেটা আমাদের নজরে কখনই পড়ে না। আমরা বাঙালীরা মনে করি আমি যা করছি তা অবশ্যই ঠিক। এই মন-মানসিকতা আমাদের প্রাকৃতিগত মজ্জায় পরিনত হয়েছে।

ইতালী ফেরত ১২৮ জনকে রাখা হয়েছে হাজী ক্যাম্পের কোয়ারাইন্টনে। বলা যায় সরকার জোর করেই তাদেরকে কোয়ারাইন্টনে রেখেছে।  কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো আপনারা যারা ইতালী ফেরত তাদেরকে কেন জোর করে সরকার কোয়ারাইন্টনে রাখবে?  বরং তাদের স্ব-ইচ্ছায় কি কোয়ারাইন্টাইনে যাওয়া উচিৎ ছিল না?  মানলাম আপনাদেরকে ইতালী এয়ারপোর্টে ভালো করে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দিয়েই বিমানে করে দেশে আসার অনুমতি দিয়েছে কিন্তু সরকার যেহেতু চাচ্ছে কিছুদিন আপনারা কোয়ারাইন্টানে থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে আপনার স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করেন, সেহেতু কি তা মেনে নেওয়া উচিত ছিল না?

বরং না তারা কি করলেন?  তারা সাথে সাথে এয়ারপোর্টে প্রতিবাদ শুরু করলেন, বিক্ষুব্দ হয়ে উঠলেন।  আসলেই কি এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ যুক্তিযুক্ত ছিল?  একবার ভেবে দেখুন। আপনাদের এমন অসহযোগিতামুলক আচরনের ফল কি দাড়াল,  প্রশাসন বাধ্য হলো আপনাদের সাথে জোর-জবরদস্তি করতে,  আপনাদের আচরনের কারনে কয়েক কোটি প্রবাসীকে অপমানমুলক কটুক্তি শুনতে হলো। এই #নবাবজাদা গালি শুনার প্রেক্ষাপটটা কি তৈরি করতে আপনারাই ভূমিকা রাখলেন না?

অনেকে অভিযোগ করছেন বিদেশ ফেরত যাদেরকে যেখানে  কোয়ারাইন্টাইনে রাখা হয়েছে সেই জায়গাটা সম্পূর্ণ অসাস্থকর।  টয়লেট, বেসিন নোংরা। থাকার পরিবেশ নেই।  মানলাম এটাও সরকারের দূর্বলতার একটি প্রকাশ।  কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো আপনারা উত্তেজিত না হয়ে ধৈর্য ধরে প্রশাসনের সাথে কি সুন্দর করে যোগাযোগ করে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এর একটি সুন্দর সমাধান করতে পারতেন না?  এতে কি আপনাদের ইজ্জত কমে যেত, অবশ্যই না।  তখন হয়ত আপনাদেরকে দেখে দেশের অনেকেই উৎসাহিত হতো, শিখতো আর উন্নত বিশ্বের সাথে আমাদের এই দেশকে মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা করত।

আপনাদের সাথে প্রশাসন যা করছে তা অবশ্যই কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। কিন্তু সরকার এক প্রকার বাধ্য হয়েই এমনটি করছে।  আর এমনটি করার উদ্দ্যেশ্যই বা কি ?  কিংবা এমন আচরনে সরকারের স্বার্থ কি?  সরকার বা প্রশাসন যা করছে তা শুধুমাত্র দেশের মানুষের স্বার্থেই।  আমরা সকলেই জানি আমাদের এই দেশ যেমন জনবহুল ঠিক তেমনি এর অধীবাসীরাও অসচেতন।  সামান্য অসচেতনতার দরুন এখানে ঘটে যেতে পারে মারাত্নক দুর্ঘটনা। করোনা ভাইরাস নিয়ে যেখানে উন্নত বিশ্বই দুমড়ে-মুছড়ে গেছে, সেখানে আমরা কতখানি এর মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো একবার চিন্তা করে দেখুন ত??

চীনের উহানে যখন বাংলাদেশীরা আটকা পড়েছিল, দেশে আসার জন্য আহাজারী শুরু করে দিয়েছিল, তখন কি এই দেশের সরকার ১৮ কোটি মানুষের রিস্ক নিয়ে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনেনি?

গতকাল বাহরাইন ফেরত যে ব্যক্তিটি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেলেন করোনা ভাইরাস নিয়ে, তিনি কেন এমনটি করলেন?  ভাবুন ত, তিনি যেদিকে যাবেন, সেদিকেই কি এই মহামারীটি নিয়ে যাবেন না?  তার মাধ্যমে কি সমগ্র দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে না এই মহামারীটি?

আজকে যে ৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের আক্রান্তের কারন ইতালী ফেরত প্রবাসী।  ঐ প্রবাসী কি জানতেন তিনি করোনা ভাইরাস বহন করে নিয়ে এসেছেন?  সূদূর ইতালী থেকে তা বহন করে নিয়ে এসে তা চুপিসারে দিয়ে দিয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানদের মাঝে।
এর জন্য দায়ী কে? 

আপনাদের সামান্য আবেগের কারনে কি ক্ষতিগ্রস্থ হবে না এই দেশটি?  আপনি কি হারাবেন না আপনার আপনজন,  স্বজন?  তার চেয়ে কি একটু কষ্ট করে সরকারকে,  প্রশাসনকে সহযোগীতার মাধ্যমে এই ভাইরাস ঠেকানোর কাজ করা যায় না?

Thursday, August 15, 2019

একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে...


মাঝ রাতে কারো জন্য ঘুম ভেঙে যাবেনা। পূর্নিমার চাঁদটা কে তখন আর ঝলসানো রুটির মত মনে হবেনা, এগুলা বাজে রকমের মিথ্যা কথা। লাল কখনো নীল হয়না, দিন কখনো রাত হয়না, রাত কখনো দিন হয়না, হারিয়ে যাওয়া সময় আর ফিরে আসেনা। খুব যত্ন করে সুনিপুণ ভাবে রেখে যাওয়া কারো শূন্যতা কখনো পূরণ হয়না, স্পষ্ট ভাবে চোখের সামনে চুরি হয়ে যাওয়া স্বপ্ন গুলো কখনো ফিরে আসেনা। ছলনাময়ী কারো জন্য বুকের বাম পাশটায় চিনচিন ব্যথা কখনো কমেনা। মাথায় ভুতের মত চেপে বসা মানুষটা কে কখনো ঝাড় ফুক করেও তাড়ানো যায়না। একসাথে জীবনের শেষ জোৎস্না দেখার খুব ইচ্ছা থাকলেও সেই মানুষটার কারণে হয়ে উঠেনা...তবে ইচ্ছাটা কিন্তু মরে যায়না।
জীবনে কেউ কথা রাখে, কেউ রাখেনা, কথা না রাখার ভীড়ে কথা রাখার হিসেবটা বড্ড বেমানান ... তবুও জীবন থেমে থাকেনা।
একদিন সব ঠিক না হবার মত করে হলেও সব ঠিক হয়ে যায়... কষ্টটা সয়ে যায়... তবে কষ্টটা কিন্তু একদম কমেনা... স্মৃতির চাদরে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদিয়ে যায়... চোখ দুটো রাঙিয়ে দেয়!!


তুরস্ক প্রবাসী 

Wednesday, August 14, 2019

হরেক রকম নানা রংয়ের ইদ


ইদ মানেই আনন্দ! খুশির শিহরন। নতুন কাপড়ের গন্ধ, সাথে মজাদার খাবারের সুঘ্রাণ। এ যেন প্রাণে অন্য রকম সঞ্চার, তারুন্যের চাঞ্চল্য। দুঃখ, ব্যাথা, বেদনা ভুলার এক অনন্য উদযাপন । ভোরের পাখির সুরেলা কন্ঠ শুনে শুনে প্রাতঃস্নান। অতঃপর ইদগাহে যাবার আয়োজন। নতুন কাপড় আর আতরের ঘ্রাণে স্নিগ্ধ ভোরের হাওয়া। সাদা, কালো, লাল, সবুজ নানা রংয়ের বাহারী পোশাক পরে ইদগাহে জমায়েত। নামাজ শেষে কুতবাহ পাঠে পিনপতন নিরবতায় মাবুদের দরবারে নিজেকে সপে দেওয়ার আপ্রাণ সাধনা। মোনাজাত শেষে সকল ব্যাথা - বেদনা ভুলে, আপন-পর দূৃরে ঠেলে, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ঘুচিয়ে একে অন্যকে বুকে টেনে নেওয়ার অপরূপ দৃশ্য। ভালোবাসার এক মিলন মেলা। এই তো ইদ!
এই ইদ। এর সংজ্ঞা একেকজনের কাছে মনে হয় একেক রকম। ছোট্ট বালক, যে কিনা মাত্র বোধশক্তি পেয়েছে তার কাছে ইদ মানে বাবা, চাচা কিংবা বড় ভাইয়ের আংগুলে ধরে রঙিন জামা পরে ইদগাহে যাওয়া। আর অবাক হয়ে জমায়েত হওয়া বিশাল জনগোষ্ঠী দেখা, নামাজের জামায়াতে এক কাতার থেকে আরেক কাতারে ছুটে চলা। এটাই ইদ আনন্দ ।
তার চেয়ে একটু বড় যে কিনা মাঠে খেলতে শিখে গেছে, বন্ধু মানে খেলার সাথী এই বোধটুকু অর্জন করে নিয়েছে তার কাছে ইদ মানে বাবা,চাচা,মামা,ভাই-বোন কিংবা আম্মুর কাছ থেকে সালামী আাদায় করে নিয়ে ইদের মেলায় ঘুরতে যাওয়া। রঙিন বেলুন, খেলনা বন্ধুক কেনার নামই তার কাছে ইদ। সারাদিন খেলার সাথীদের সাথে ঘুরাঘুরি, হৈ হুল্লোড় শেষে নতুন জামায় এক রাশ কাদা-মাটি নিয়ে ঘরে ফেরা। এ এক অন্য রকম আনন্দের ইদ।
কৈশোরের ইদ আনন্দ। এ যেন এক রোমাঞ্চকর জীবন। বাবার কাছে কিংবা মায়ের কাছে বায়না ধরে সালামী আদায়। ইদের আগে নিজের পছন্দমতো জামা-কাপড় কেনা অতঃপর ভোরবেলা গোসল শেষে সেই কাপড় পরে নিজেকে হিরো মনে করে ইদগাহে নামাজ পড়া। নামাজ শেষে বন্ধুদের সাথে নিয়ে দূর-ভ্রমণ। সারাদিনই কাটানো মাস্তি-আড্ডায় আর ঘুরাঘুরিতে। ইদ মানেই বাধন হারা গোল্লাছুট জীবন। এটাই ইদ। ইদের রং।
যৌবনের ইদ। এই ইদের রং মনে হয় একটু ভিন্ন রকম। কারো কাছে রঙিন আবার কারো কাছে ধূসর আবছায়ার প্রতিচ্ছবি। সবার মত ভোরবেলা ইদের আয়োজনে ব্যস্ত থাকলেও থাকেনা চঞ্চলতা, দূরন্তপনা কিংবা গোল্লাছুটের জীবন। চেহারায় স্পষ্ট চাপ থাকে নিশ্চিত - অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তারেখা, থাকে দায়িত্ববোধের এক মহা গুরুত্ব। আবার কেউ হয়তো থাকে উদাসীন। কারো সারাদিন কাটে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের খোজ খবরে আবার কারো দিন কাটে একাকী শুয়ে বসে কিংবা বন্ধুদের সাথে মনমরা আড্ডায়। সম্পূর্ণ বিপরীত এই ইদ আনন্দ জীবনের ফেলে আসা মঞ্চগুলোর তুলনায়।
বাবাদের ইদ।নস্টালজিক ইদ। বাবা টাকাওয়ালা হউক আর না হউক। সব বাবাদের ইদ মনে হয় একই রকম। শাসকের ইদ। সন্তানের নিকট বাবারা এই দিন চরম স্বৈরাচারী মনে হয়। কেউ অভাবের তাড়নায় সন্তানের চাহিদা পুরনে অক্ষমতার দরুন আবার কেউবা চাহিদা পুরনের পর কড়া নজরদারীর কল্যানেই এই মহা উপাধীতে ভুষিত হয়ে থাকেন বাবাদের অজান্তেই। তাই বলে কি বাবারা বুঝেন না? তা কিন্তু নয়। বাবারাও যে এই স্টেজ ক্রস করে এসেছেন। তাই তারাও বুঝেন, তবুও বাবা হিসেবে শাসন করেন। তাদের করতে যে হয়। তাদের মনে হয় পেছনে চলে যেতে, দূরন্তপনা আর চঞ্চলতায় ভরিয়ে তুলতে এই দিনটিকে, কিন্তু পারেন না। কেন পারেন না তাও মনে হয় তাদের কাছেই অজানা থেকেই যায়। মনে হয় রংহীন ইদ।
দাদদের ইদ। নিরামিশ। অন্যান্য দিনের মতই সাধারন একটি দিন। আমার কাছে তাই মনে হয়। । তবে দাদারা মনে হয় ভোর থেকেই অপেক্ষায় থাকেন কখন নাতি-নাতনিরা আসবে। তাকে আঙ্গুল ধরে ইদগাহে নিয়ে যাবে। এরা কিন্তু নস্টালজিয়ায় ভোগেন না বরং অনাগত দিন নিয়েই শংকায় থাকেন। বাবা থাকতেই নস্টালজিয়াকে বিদায় দিয়ে এসেছেন। বরং এরা এই ইদে থাকেন ছোট ছোট নাতি-নাতনির আহ্লাদে আহ্লাদিত, গল্প শুনানোর জন্য থাকেন মুখিয়ে। অপেক্ষায় থাকেন কখন নাতি-নতনিরা তাকে ঘিরে বসবে৷, বায়না ধরবে গল্প শুনানোর। হয়তো কারো ভাগ্যে তখন জুটে পুত্রবধু কিংবা পুত্রের অবহেলা। তবুও তারা মেনে নেয়। মেনে যে নিতেই হয়।
এই ইদ। প্রতিবছরই আসে আমাদের জীবনে। আসে বছরে দুইবার। নানা রংয়ে, নানা রকম সাঝে। জীবনের অর্থ বুঝিয়ে দিতে আসে। আজ রঙিন কাল ধূসর। এই তো জীবন। এই তো ছুটে চলা চক্রাকারে । এই যে ভাবেন জীবনের নানা স্টেজে নানান রকম রং। হরেক রকম ইদ আনন্দ। কেউ দিয়ে আনন্দিত আবার কেউ পেয়ে কিংবা গ্রহণ করে আনন্দিত। চাইলেও সে আসবে, না চাইলেও সে আসবে। তাকে যে আসতেই হবে নানা রংয়ে নানা রকমে। ছোট-বড়, ধনী-দরীদ্র, সফল-ব্যর্থ সবাইকে এসে সে বলবেই ইদ মোবারক।

Tuesday, November 20, 2018

আদর্শের লড়াই আদর্শ দিয়েই করতে হয়।


আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই: ইসলামের ইতিহাসে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই সর্বপ্রথম মুনাফিকীর বহিঃপ্রকাশ ঘটান। যার মুনাফিকীর দরুন স্বয়ং রাসুল সাঃ এর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল আরবের মাটি, মুসলমানরা সাময়িকভাবে পরাজিত হয়েছিল উহুদের যুদ্ধে ।অথচ এই আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই রাসুল সা এর অনুকরনে সর্বদাই থাকতেন প্রথম সারিতে। দাড়ি, চুল,পোশাক এমনকি নামাজের সময়ও থাকতেন প্রথম সারিতে। অথচ তিনিই ছিলেন মোনাফেক সর্দার।

মোস্তফা কামাল পাশা আতাতুর্ক : কামাল পাশা ছিলেন বিংশ শতাব্দীতে উসমানী খিলাফত ধ্বংসের মহানায়ক! তিনি উসমানি খলিফাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন ইসলামের দোহাই দিয়ে। ইসলামকে সামনে রেখে তিনি তৎকালীন যুবসমাজকে একত্রিত করে খিলাফত ধ্বংস করে নিজে ক্ষমতায় বসেন। তিনি ছিলেন পাক্কা মুসলমান! তুরস্কে তার ক্ষমতা গ্রহণের অভিষেকও হয়েছিল মসজিদে জুমআর সালাত আদায়ের মাধ্যমে ।কিন্তু ক্ষমতায় আরোহন করে তিনি তুরস্ক থেকে ইসলামকে ঝেটিয়ে বিদায় করেন। সেখানে মসজিদে আরবি ভাষায় আযান নিষিদ্ধ করেন, নিষিদ্ধ করেন দাড়ি, টুপি, মাদ্রাসা এমনকি আরবি ভাষায় কুরআন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেন তিনি। আরবি ভাষাকে নিষিদ্ধ করে মুসলানদের প্রায় সাতশত বছরের গৌরবজ্জল ইতিহাসকে নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টা চালান। ইসলামকে বিদ্রুপ করে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করেন মুসলিম শাসনের স্বর্ণ যুগকে নিয়ে। অথচ কামাল পাশাও ছিলেন একজন পাক্কা মুসলমান! !!

আবুল ফজল : বাদশাহ আকবর দ্বীন্-ই এলাহি নামে একটি নতুন ধর্ম প্রচলন করেছিলেন। যার আইনগ্রন্থের নাম ছিল "আকবরনামা" ।আর এই আইনগ্রন্থের প্রণেতা ছিলেন তৎকালীন আলেমসমাজের মধ্যমনি মুফতি আবুল ফজল। বাদশাহ আকবরের প্রধান সহযোগী ছিলেন এই আবুল ফজল, আর তিনিও ছিলেন পাক্কা মুসলিম ! হক্কানি আলেম!
এখন আসি মুলকথায়, আমি উপরে তিনটি যুগ, আর তিনটি সাম্রাজ্যের উদাহরন দিয়েছি। ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে যাদের নূন্যতম ধারনা আছে তারা জানে এই তিনটি সময় মুসলমানদের কি পরিমান সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
উহুদ যুদ্ধে মুসলমানদের হযরত হামজা রা: সহ ৭০জন সাহাবায়ে কেরাম শাহাদাত বরন করেছিলেন শুধুমাত্র আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইর মুনাফিকি আচরনের জন্য। তথাপি রাসুল সা: তার বিরুদ্ধে তেমন কোন একশনে যাননি। বরং শীর্ষস্থানীয় সাহাবায়ে কেরামদের আপত্তি সত্বেও তার জানাযায় ইমামতি করেছিলেন তিনি। এখানে জয়ি হয়েছিল রাসুল সা: এর আদর্শ। মৃত্যু ঘটিয়েছিল প্রতিহিংসার এবং পরবর্তীতে আরো মুনাফিক তৈরি আশংকা।
কামাল পাশা ক্ষমতায় আরোহন করেই ইসলামী খিলাফতকে বাতিল করে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ আইন জারি করেন এবং তার শাসনের ১৫ বছরে তুরস্ককে একটি সেক্যুলর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলার বীজ রোপন করেন। আজকের তুরস্ককে মিলিয়ে দেখুন। হুম ভালো করে মিলিয়ে দেখুন। যে তুরস্কে আযান ছিল নিষিদ্ধ, কুরআন পড়তে হতো ল্যটিন ভাষায়, মহিলারদের বোরখা পরা দূরে থাক মাথায় হিজাব পরলেও যেতে হতো কোর্টে সেখানে আজ তুরস্কের সংসদে প্রেসিডেন্টের ইমামতিতে নামাজের জামায়াত আদায় হচ্ছে। কারন কি জানেন? কারন কামাল পাশার আদর্শের বিপরীতে সেখানে গড়ে উঠেছিল আরো একটি আদর্শ, ইসলামী আদর্শ। কামাল পাশাকে এই ইসলামী আদর্শ হিংসার বশে দুরে টেলে দেয়নি বরং তাকে জাতীয় বীরের মর্যাদাই দিয়েছে। সেখানে তার জীবনী অধ্যয়ন করা হয়, তার জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস পালন করা। তার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।আর সে কারনে আজ সেখানে প্রতিহিংসার অপমৃত্যু ঘটেছে। আর এর নামই আদর্শ। আদর্শের জয়।
আবুল ফজল ছিলেন সম্রাট আকবরের প্রধান পরামর্শদাতা। আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ইচ্ছামত জীবনযাপন করার জন্য তিনি রচনা করেছিলেন আকবরনামা ( হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকল ধর্মের জগাখিচুড়ি ) নামক ধর্মীয় গ্রন্থ। আর এই আবুল ফজল ছিলেন মৌলানা মুফতি মো: আবুল ফজল নামে পরিচিত। তার সময়ে তিনি মোঘল সাম্রাজ্যের সবচেয় বড় আলেম ছিলেন। অথচ আমরা কয়জন জানি ইনি ছিলেন এত বড় আলেম? 

এর কারন হচ্ছে উনার নামের আগে এখর আর কেউ আলেম লিখেন না।তার জীবনি সম্পর্কে কেউ আলোচনা করেন না। উনার সমকালীন হক্কানী আলেমরা পরবর্তীতে তার নামের আগের আলেম শব্দটি মুছে ফেলেন ঘৃণা এবং প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে । আর প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আবুল ফজলের নামের আলেম শব্দটি মুছে ফেলার কারনে পরবর্তী প্রজন্ম ভুলে যায় মৌলানা আবুল ফজলকে। যার কারনে এই ধরনের গাদ্দার আলেমদের বিরুদ্ধে তেমন শক্ত আদর্শ তৈরি হয়নি। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আবুল ফজল হয়ে উঠেন সাধারন একজন মুনাফিক । প্রতিহিংসার বশবর্তি হয়ে যদি তার নাম থেকে মৌলানা শব্দটি মুছে না ফেলা হত তাহলে এই সকল গাদ্দার আলেমদের বিরুদ্ধেও সত্যের আলোকবর্তিকা রুপে একটি আদর্শ গড়ে উঠত। প্রজন্মের পর প্রজন্ম জানতে পারত আলেমনামদারী এ সকল গাদ্দারদের।সতর্ক হতে পারত এহেন জাহেলদের কাছ থেকে.
সুতরাং একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা আহলে হাদিস,মওদুদিবাদ,ওহাবি,শিয়া,সুন্নী প্রভৃতি আদর্শ নিয়ে মারামারি,ঝগড়াঝাঁটিতে লিপ্ত। একে অন্যকে হুমকি-ধামকি,ক্ষমতার জোরে এই করব সেই করব বলে হুংকার দিচ্ছি। কিন্তু এই সকল আদর্শকে মোকাবেলা করার জন্য আমরা কি কোন আদর্শ জাতির সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হচ্ছি ? আদর্শের মোকাবেলা আদর্শ দিয়েই করা উচিত। আপনার আদর্শ আপনার কাছে ভালো, উত্তম। সেই আদর্শ প্রচার করার জন্য কি আপনি হিংসার পথ বেছে নিবেন? যদি আপনি এই পথ বেছে নেন তাহলে উপরের ব্যক্তিগণের পরিনতি আপনাকেও হতে হবে , এটা নিশ্চিত মনে রাখবেন।
আদর্শের বাস্তবায়ন একটি সমাজকে, রাষ্ট্রকে নিমিষেই পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতে পারে। হোক তা একটি ভালো আদর্শ অথবা মন্দ আদর্শ। তা আদর্শই। আসুন প্রতিহিংসার আদর্শ পরিহার করে নিজ আদর্শ প্রতিষ্ঠার কাজে মনোযোগ দেই। মনে রাখবেন বিরোধীতা করে কোন আদর্শকে কেউ কখনো দমাতে পারেনি, তার পাবলিসিটি বাড়ানো ছাড়া। ইতিহাস এটাই বলে।
অন্য আদর্শকে জোর জবরদস্তি করে সমাজ থেকে কখনই দূরে টেলে দিতে পারবেন না, যতক্ষননা আপনার আদর্শ তার আদর্শের তুলনায় শক্তিশালী হবে। সুতরাং আসুন গাল-মন্দ, গলাবজি, ধাপ্পাবাজি পরিহার করে নিজ আদর্শকে শক্তিশালী করার কাজে মনোযোগ দেই। মহান আল্লাহ আমাদের আলেম সমাজ সহ সকলকে এ বুজ দান করুন আমিন

আমরা কোটা পদ্ধতি চাই, তবে তা চাকুরিতে নয় তা হোক শিক্ষা গ্রহনে...


একজন চাকুরী প্রার্থী কখন নিজেকে চাকুরী করার যোগ্য হিসেবে ভাবে? যখন সে গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করে ঠিক তখন থেকেই তার মাথায় চাকুরীর চিন্তা-চেতনা প্রবল হয়। তখন সে খোজে কিভাবে সহজে চাকুরী পাওয়া যায়।এ অবস্থায় যদি তার একটা কোটা থাকে সেক্ষেত্রে কাজটি তার জন্য অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়.....
কিন্তু একজন কোটাধারী টাকা-পয়সার অভাবে গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট না করে কি চাকুরী নিতে পারবে? উত্তর আসবে অবশ্যই "না"।
তাহলে এই কোটা সমাজকে কি দিচ্ছে? দিন শেষে যেই লাউ, সেই কদু নয় কি? অর্থাৎ যার লেখাপড়া করার সামর্থ আছে সে দিন শেষে চাকুরী পাবে,আর যার সামর্থ্য নেই সে পাবে না। সেখানে সে কোটাধারী হোক আর না হোক, সে কিন্তু চাকুরী পাচ্ছেই।
কিন্তু এই কোটা ব্যবস্থা যদি একজন ছাত্রের শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে হয় তাহলে দিনশেষে সেও একজন চাকরিজীবী হতে পারে। একজন কোটাধারী শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষাব্যয় যদি সরকার গ্রহণ করে তাহলে টাকার অভাবে কোনো কোটাধারী শিক্ষার্থী মাঝপথে ঝড়ে পড়বে না। আর কোটা পদ্ধতিটাও তখন বৈষম্য থাকবে না। কোটা ব্যবস্থাটা হবে আশীর্বাদ।
আমরা কোটা পদ্ধতি চাই, তবে তা চাকুরিতে নয় তা হোক শিক্ষা গ্রহনে..
বিচার হবেই ইনসাফের আদালতে

অক্টোবর আসে বছর ঘুরে
হৃদয়ের ক্ষত নিয়ে,
হায়েনাদের উল্লাস,হিংস্রতা
লাশের উপর নৃত্য দেয় স্মরিয়ে।
ওরা মানুষ নাকি হায়েনা?
কোন লকবে ডাকবে বিশ্ব?
লগি-বৈঠার আঘাতে ছিন্ন-ভিন্ন দেহ
যায় কি সহজে ভোলা ঐ দৃশ্য?
কুরআনের পাখিরা ফিরবে না আর
ফিরবে না মায়ের কোলে,
অক্টোবরের ২৮ তারিখ স্মৃতিগুলো
বারে বারে হৃদয় জ্বলে।
বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে
কেদে মরে ঐ জালিমের তখতে,
অপেক্ষার প্রহর গুণে মজলুমেরা
বিচার হবেই ইনসাফের আদালতে..

কয়েকদিন আগেই জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্ভোধন হয়ে গেল বাংলাদেশের অন্যতম বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটিলাগড় ইকো পার্ক, সিলেট, সিলেট এর। লোভ হচ্ছিল জায়গাটি ভ্রমনের কিন্তু সময় এবং সঙ্গীর অভাবে আর যাওয়া হচ্ছিল না।
 তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, সদা হাস্যোজ্বল #ফয়েজ ভাইকে ফোন দিতেই এক পায়ে খাড়া আর #মন্জুর ভাইও মনে হয় আমার মতোই ছিলেন দোদুল্যমান অবস্থায়। প্রস্তাব দিতেই কিছুটা সময় চিন্তা ভাবনা করে সম্মতি দিয়ে দিলেন। সিদ্ধান্তুনুযায়ি ডিউটি শেষ করেই ছুটে চললাম কিছুটাএডভেঞ্চার এর নেশায়।

জায়গাটি নিরিবিলি এবং শহরের সন্নিকটে হওয়ায় যান্ত্রিকতার ফাকে কিছুটা সময় প্রকৃতির কাছে নিরিবিলি সময় কাঠানোর সবার জন্য একটা সুন্দর মাধ্যম হতে পারে।হতে পারে বিনোদনের একটা ক্ষেত্র যা স্বল্প সময়ে আপনার মনকে করে তুলতে পারে প্রফুল্ল।
বন্য প্রাণীগুলোর মধ্যে হরিণ, জেব্রা, খরগোস, পাইথন সাপ এবং কয়েক প্রজাতির পাখির মাধ্যমে এ অভয়ারণ্যটি উদ্বোধন করলেও এ অঞ্চলটিকে দেশের অন্যতম বিরাট চিড়িয়াখানা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। আর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন নগরী হিসেবে সিলেট হয়ে উঠবে আরো আকর্ষণীয় ..........

Sunday, March 5, 2017

বোবা কান্না

                         

   (এক)

" রুপা! শুধু নামে নয়, রুপেও অতুলনীয়। আন্ধার ঘরে যেন এক টুকরো আলোক বাতি। প্রতি কদমে যেন রূপোর ঝিলিক, দেহ ছুয়ে ছুয়ে পড়ছে তার সৌন্দর্য।"

কি হলো ,এভাবে চোখ বন্ধ করে বোকার মত হাসছ কেন? " রুপার মিষ্টি ধমকে আচমকা চমকে উঠল সবুজ। তার প্রিয়তমার কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে হারিয়ে গেছে কল্পনার অচিন জগতে। বুঝতেই পারেনি যে  রুপা এসে ঘরে ডুকেছে। সবুজও একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে রুপাকে কাছে ডেকে নেয়। 

রুপাও তার প্রিয়তম স্বামীর বুকে মাথা গুজে। সবুজ রুপার মাথায় চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলে "না, ভাবছিলাম আমার বউয়ের কথা, ইহজগতে

Tuesday, February 14, 2017

ভালোবাসা দিবস

ভালোবাসা দিবস উদযাপন : বিকৃত মস্তিস্কের এক উৎসবের নাম 

মোঃ ইয়াউমিন কাওছার চৌধুরী 


ভালোবাসা শব্দটি খুব সহজেই সকলের সহজাত প্রবৃত্তির সাথে মিশে যায়,কেননা জন্মের পর থেকেই মানুষের বেড়েউঠা এই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই,আর তাই ভালোবাসার দিনটিকে নিয়ে সকলের ভাবনাটাও থাকে বিশেষ।অপেক্ষা এবং আগ্রহ নিয়ে এই দিনটির অপেক্ষা করে ষোড়শী, তন্ময়রা। 

Sunday, February 5, 2017

ছাত্রশিবির

ছাত্রশিবির : সবুজ চত্বরে লালগালিচার এক দুর্জয় কাফেলা
মোঃ ইয়াউমিন কাওছার চৌধুরী

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, যে নামটিতে রয়েছে এক উন্মাদনা, প্রেরণা, স্বপ্ন এবং ভালোবাসা। এই নাম শুধু নাম নয়, এটি একটি ঘর, বিশাল এক সংসার ।প্রবাহমান এক নদীর নাম, যে নদী ভাসিয়ে নিয়ে যায় সাগর সমান হতাশা , মনের গহীনে ঝমাট বাঁধা আবর্জনা, ময়লা আর ক্লেশ।