মো: ইয়াউমিন কাওসার চৌধুরী
আজ সকাল থেকেই নাবিলের খুব খুশি লাগছে। আনন্দে তার নাচতে ইচ্ছে করছে আর সুর করে গান গাইতে
মন চাচ্ছে "তাত দিনা দিন দিন.........'। কারন আজ তার প্রথম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকী, এ জন্য অবশ্য তার খুশি খুশি লাগছে না। খুশি লাগছে অবশ্য অন্য কারনে।
গতকাল রাত্রে যখন তার আম্মু তাকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল তখন হঠাৎ করেই তাকে বলল " আব্বু তুমি কি জানো, কালকে
তোমার জন্মদিন? "
নাবিল তখন বলেছিল " দম্মদিন তি আম্মু?"
তখন তার আম্মু তার আদরের দুলালের কপালে চুমু একে দিয়ে বলেছিল "জন্মদিন হল যেদিন তুমি এই দুনিয়ায় এসেছিলে "
নাবিল তার আম্মুর এমন কঠিন কথার কোন মানেই খুজে পেলনা। সে ফ্যাল ফ্যাল করে তার আম্মুর মায়াবি মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
সে ভেবে কুল কিনারা করতে পারল না আম্মুর এই কথার অর্থ। সে ভাবনার জগতে হারিয়েই গেল, আর কোন কথা না বলেই
সুবোদ বালকের মতো খাওয়া দাওয়া শেষ করল।
মন চাচ্ছে "তাত দিনা দিন দিন.........'। কারন আজ তার প্রথম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকী, এ জন্য অবশ্য তার খুশি খুশি লাগছে না। খুশি লাগছে অবশ্য অন্য কারনে।
গতকাল রাত্রে যখন তার আম্মু তাকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছিল তখন হঠাৎ করেই তাকে বলল " আব্বু তুমি কি জানো, কালকে
তোমার জন্মদিন? "
নাবিল তখন বলেছিল " দম্মদিন তি আম্মু?"
তখন তার আম্মু তার আদরের দুলালের কপালে চুমু একে দিয়ে বলেছিল "জন্মদিন হল যেদিন তুমি এই দুনিয়ায় এসেছিলে "
নাবিল তার আম্মুর এমন কঠিন কথার কোন মানেই খুজে পেলনা। সে ফ্যাল ফ্যাল করে তার আম্মুর মায়াবি মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
সে ভেবে কুল কিনারা করতে পারল না আম্মুর এই কথার অর্থ। সে ভাবনার জগতে হারিয়েই গেল, আর কোন কথা না বলেই
সুবোদ বালকের মতো খাওয়া দাওয়া শেষ করল।
রাত্রে যখন আম্মু তাকে ঘুম পাড়ানির গান গেয়ে ঘুম
পাড়াচ্ছিলেন তখন সে আর চুপ রইল না। নাবিল আম্মুকে বলল "আম্মু, আমি আদে তৈ তিলাম? " । নাবিলের আম্মু প্রথমে ছেলের এমন প্রশ্ন বুজতে না পারলেও পরক্ষনেই বুঝে নিলেন ছেলের মনের কথাটি। তাই তিনি মজা করেই বললেন "ও এই কথা! তুমি আমার এই পেটের মধ্যেই ছিলে বাবা " বলেই তিনি মুচকি হেসে ছেলেকে
বুকে জড়িয়ে নিলেন । মায়ের এমন উষ্ণ ভালোবাসায় নাবিলও দুহাতে মাকে জড়িয়ে ধরল। সে মনে মনে চিন্তা করল রাজুদের ঘরে দেখা মুরগির
বাচ্চাগুলোর কথা।
রাজুর কথা মনে হতেই তার মনে পড়ে গেল রাজুর আব্বুর
কথা, যাকে সে আন্কেল বলে ডাকে।সে প্রায় প্রতিদিনই দেখে রাজুর আব্বু যখন বাইরে থেকে আসে তখন তার জন্য চকলেট, বিস্কিট, খেলনা আরো কত কিছুই
নিয়ে আসে। কিন্তু তার আব্বু কৈ ? তিনি তো এখনো একদিনও নাবিলকে দেখতে এলেন না ...
পাড়াচ্ছিলেন তখন সে আর চুপ রইল না। নাবিল আম্মুকে বলল "আম্মু, আমি আদে তৈ তিলাম? " । নাবিলের আম্মু প্রথমে ছেলের এমন প্রশ্ন বুজতে না পারলেও পরক্ষনেই বুঝে নিলেন ছেলের মনের কথাটি। তাই তিনি মজা করেই বললেন "ও এই কথা! তুমি আমার এই পেটের মধ্যেই ছিলে বাবা " বলেই তিনি মুচকি হেসে ছেলেকে
বুকে জড়িয়ে নিলেন । মায়ের এমন উষ্ণ ভালোবাসায় নাবিলও দুহাতে মাকে জড়িয়ে ধরল। সে মনে মনে চিন্তা করল রাজুদের ঘরে দেখা মুরগির
বাচ্চাগুলোর কথা।
রাজুর কথা মনে হতেই তার মনে পড়ে গেল রাজুর আব্বুর
কথা, যাকে সে আন্কেল বলে ডাকে।সে প্রায় প্রতিদিনই দেখে রাজুর আব্বু যখন বাইরে থেকে আসে তখন তার জন্য চকলেট, বিস্কিট, খেলনা আরো কত কিছুই
নিয়ে আসে। কিন্তু তার আব্বু কৈ ? তিনি তো এখনো একদিনও নাবিলকে দেখতে এলেন না ...
নাবিল তার আম্মুকে আরো শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে। আদুরে তুলতুলে কন্ঠে বলল "আম্মু আমাল আব্বু তৈ?" ।ছেলের এমন প্রশ্নে নাবিলের আম্মু থমথম খেয়ে যান। তিনি কি জবাব দেবেন তাই খুজে পাচ্ছিলেন না। নাবিল এ সময় যদি তার মায়ের মুখের দিকে তাকাত তাহলে
দেখতে পেত তার মায়ের মুখ কেমন কালবৈশাখীর আকাশের রূপ ধারন করেছে। তিন শত কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বললেন "তুমার আব্বুকে
বুঝি দেখত চাও? "নাবিল মাথা নেড়ে বলল, "হুম দেততে তাই "। "ঠিক আছে বাবা তাইলে এখন ঘুমাও, কাল সকালেই তুমাকে নিয়ে যাব তোমার বাবার কাছে "।
দেখতে পেত তার মায়ের মুখ কেমন কালবৈশাখীর আকাশের রূপ ধারন করেছে। তিন শত কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বললেন "তুমার আব্বুকে
বুঝি দেখত চাও? "নাবিল মাথা নেড়ে বলল, "হুম দেততে তাই "। "ঠিক আছে বাবা তাইলে এখন ঘুমাও, কাল সকালেই তুমাকে নিয়ে যাব তোমার বাবার কাছে "।
নাবিল খুশিতে কাল সারারাত ঘুমুতে পারে নি।কিন্তু মায়ের বকুনি খাবে বলে ঘুমের ভান করেছে সারাটি রাত্রি। সকাল সাকাল তাই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আজ।
তার যেন আর তর সহ্য হচ্ছে না। খুশিতে তার আগডুম -
বাগডুম ৭করে নাচতে ইচ্ছে করছে। সে গতকাল সারা রাত বাবাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা
করেছে।
নাবিল প্লান করেছে বাবা যদি তাকে প্রচুর পরিমানে ক্যান্ডি না দেয়, তাহলে সে তার সাথে কথাই বলবে না ......
তার যেন আর তর সহ্য হচ্ছে না। খুশিতে তার আগডুম -
বাগডুম ৭করে নাচতে ইচ্ছে করছে। সে গতকাল সারা রাত বাবাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা
করেছে।
নাবিল প্লান করেছে বাবা যদি তাকে প্রচুর পরিমানে ক্যান্ডি না দেয়, তাহলে সে তার সাথে কথাই বলবে না ......
মা টাও যে কি? এত বেলা হয়ে গেল তবুও কোন সাড়া নেই। কখন যাবে বাবার কাছে নিয়ে। তার যে আর দেরি সহ্য হচ্ছে না। বাবার গলা জড়িয়ে ধরবে। বাবার গালে ,নাকে, কপালে উম্মা দেবে ঠিক রাজু যেভাবে তার বাবাকে দেয়। রান্নাঘরে নাবিল মায়ের চারপাশে আলতো আলতো পা ফেলে ঘুর ঘুর করতেই থাকে....মায়ের কি আর বুজতে বাকি বাবার মমতা ছাড়া বেড়ে উঠা ছেলেটি আজ কি চায়? নাবিলের মাও হাতের কাজে তাড়া দেন। দ্রুত কাজ শেষ করে ছেলেকে গোসল করিয়ে নেন। সাদা পঞ্জাবি, পাজামা আর টুপি পরিয়ে দেন হাড়ি থেকে একটু কালি হাতের আঙুলে লাগিয়ে ছেলের কপালের ডান পাশে একটি ছোট্ট বৃত্ত একে দিয়ে বলেন "আমার রাজপুত্র বাবা "
নাবিলের আনন্দ দেখে কে। তার যেন আজকে ঈদের আনন্দ। আনন্দে তার দম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কালো বোরকায় আপদমস্তক ডাকা নাবিলের আম্মু তাকে কোলে তুলে নিলেন। রওয়ানা দিলেন নাবিলের আব্বুর সাথে সাক্ষাত করার জন্য। নাবিলের মনে থেকে থেকে আনন্দের ঝিলিক দিলেও গত রাত থেকে তার মায়ের মনে কেমন অশান্তি বিরাজ করছে। ফর্সা মুখখানা যেন এক অজানা দুশ্চিন্তায় ফ্যাকাসে হয়ে আছে। তিনি তার আদরের দুলালকে কোলে নিয়ে হাটতে হাটতে হারিয়ে গেলেন কল্পনার রাজ্যে।
বেশি দিন আগে নয়, বছর চারেক আগের কথা। সরকারি প্রাইমারি স্কুলে সদ্য চাকুরি পাওয়া রাহামের সাথে নাফিসার বিয়ে হয়। নাফিসা তখন ডিগ্রী শেষ বর্ষের ছাত্রী। যদিও নাফিসা এই সময়ে বিয়ে করতে মোটেই প্রস্তুত ছিল না।তারপরেও তাকে রাজী হতে হয়েছিল বাবা মায়ের জন্যই। গ্রামে সাধারনত তার বয়সী মেয়ে খুব কমই পাওয়া যাবে যাদের বিয়ে হয়নি।
মোটামুটি ধুমধাম করেই নাফিসার বিয়েটা হয়ে গেল। চেনা - জানা এক পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ এক অচেনা পরিবেশে এসে নাফিসা তার সংসারকে নিজ কর্মগুণে সাঝাতে শুরু করে দিল। সে ধীরে ধীরে শশুড়-শাশুড়ির মনে জয়গা করে নিল আপন মেয়ের মতই। বিয়ের পর প্রথম প্রথম মা-বাবাকে অনেক মিস করলেও রাহামের মা-বাবার আচরনে নাফিসা তার নিজ বাবা মায়ের অভাবটুকু ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে লাগল। স্বামীর সোহাগ আর শ্বশুড় শাশুড়ির ভালোবাসায় তার বেশ আনন্দেই দিন কাটাতে লাগল।
নাফিসার মনে পড়ল সেই রাতটির কথা, যেদিন প্রানের স্বামীকে নাবিল তার গর্ভে আসার শুভ সংবাদটি দিয়েছিল। সেদিন সারা রাত্রি রাহাম ঘুমায়নি। তাদের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে। যদি ছেলে হয় তবে কি নাম রাখবে আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে? ??
ভাবতে ভাবতে সে রাতটি নির্ঘুমই কেটেছিল দুজনার। অতপর ভোরের আলো ফুটার পর রাহাম যে কান্ডটি করেছিল তা স্মরণ করলে এখনো নাফিসা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে....
(চলবে)
মোটামুটি ধুমধাম করেই নাফিসার বিয়েটা হয়ে গেল। চেনা - জানা এক পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ এক অচেনা পরিবেশে এসে নাফিসা তার সংসারকে নিজ কর্মগুণে সাঝাতে শুরু করে দিল। সে ধীরে ধীরে শশুড়-শাশুড়ির মনে জয়গা করে নিল আপন মেয়ের মতই। বিয়ের পর প্রথম প্রথম মা-বাবাকে অনেক মিস করলেও রাহামের মা-বাবার আচরনে নাফিসা তার নিজ বাবা মায়ের অভাবটুকু ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে লাগল। স্বামীর সোহাগ আর শ্বশুড় শাশুড়ির ভালোবাসায় তার বেশ আনন্দেই দিন কাটাতে লাগল।
নাফিসার মনে পড়ল সেই রাতটির কথা, যেদিন প্রানের স্বামীকে নাবিল তার গর্ভে আসার শুভ সংবাদটি দিয়েছিল। সেদিন সারা রাত্রি রাহাম ঘুমায়নি। তাদের সন্তান ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে। যদি ছেলে হয় তবে কি নাম রাখবে আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে? ??
ভাবতে ভাবতে সে রাতটি নির্ঘুমই কেটেছিল দুজনার। অতপর ভোরের আলো ফুটার পর রাহাম যে কান্ডটি করেছিল তা স্মরণ করলে এখনো নাফিসা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে....
(চলবে)
বন্ধু সুন্দর হইছে
ReplyDeleteThanks
Delete